আগামী রবিবার পবিত্র শবে বরাত।
কবিরহাট নিউজ,
ইসলামী ডেস্ক, শুক্রবার, ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং, দোষী ফাল্গুন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ।
১২ই শাবান ১৪৪৫ হিজরী।
শবে বরাত বা সৌভাগ্যের রজনী।
শব-একটি পারসি শব্দ, এই শব শব্দটির অর্থ হচ্ছে=রাত।
আর ফারসিতে-বরাত শব্দের অর্থ হচ্ছে সৌভাগ্য।
আরবিতে-বরাত শব্দের অর্থ হচ্ছে সম্পর্কচ্ছেদ অথবা মুক্তি।
তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি “শবে বরাত” মানে সৌভাগ্য অথবা মুক্তির রজনী।
আর আরবিতে রাতটাকে বলা হয় লাইলাতুল বরায়াত বা মধ্য শাবানের রাত্রি।
এই মধ্য সাবানের রাত্রি সম্পর্কে কয়েকটা হাদিস তুলে ধরা হলো:
১। মধ্য শাবানের রাতে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিলোকের দিকে দৃষ্টি দান করেন এবং সবাইকে মাফ করে দেন কেবল মুশরিক ব্যক্তি ছাড়া ও যার মধ্যে ঘৃণা বিদ্বেষ রয়েছে তাকে ছাড়া। বর্ণনায়, মুয়ায বিন্ জাবাল।
(আল-মুনযিরী তাঁর আত-তারগীব ওয়াত-তারহীবে (২/১৩২) বলেন “সহিস হাদিস”।
আল-আলবানীর দৃষ্টিতেও হাদিসটি সহিহ। আস-সিলসিলাহ আস-সাহীহাহ (৩/১৩৫)
২। আল্লাহ তা’আলা মধ্য শাবানের রাতে দুনিয়ার আসমানে আসেন এবং সকলকে মাফ করে দেন কেবল সেই ব্যক্তি ছাড়া যার হৃদয়ে ঘৃণা বিদ্বেষ রয়েছে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরিক সাব্যস্ত করে (অর্থাৎ মুশরিক)।
বর্ণনায়, আবু বাকর (রা.)।
(ইবন হাজর আল-আসক্বালানীর আল-আমাল আল-মুথলাক্বাহ গ্রন্থে (ক্রম, ১২২) ।
৩। আল্লাহ তা’আলা মধ্য শাবানের রাতে দুনিয়ার আকাশে নামেন এবং কালব গোত্রের ভেড়িগুলোর লোমের সংখ্যার পরিমাণের চেয়ে বেশি লোকজনকে মাফ করে দেন। বর্ণনায়, আয়েশা বিনত আবুবাকর (রা.)।
(আল-আলবানী বলেন, হাদিসটি অন্য সূত্রে সহীহ।তাখরীজ মিশকাত আল মাসাবীহ, (ক্রম, ১২৫১) প্রণয়নে আল-আলবানী ।
৪। এক রাতে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) নামাজ পড়তে দাঁড়ালেন। তাঁর সেজদা এতই দীর্ঘ হল যে আমার মনে হল তিনি নিষ্প্রাণ হয়ে পড়েছেন। অবস্থা এমন মনে হওয়ার আমি উঠলাম কিন্তু (পরক্ষণে) তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলির সঞ্চালন অনুভব করলাম এবং তাঁর নড়াচড়াও পেলাম। তাই আমি শুয়ে পড়লাম।
তারপর তিনি যখন সেজদা থেকে মাথা তুললেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন বললেন, “আয়েশা, তুমি কি মনে করেছিলে আমি অন্য কোথাও চলে গেছি?” আমি বললাম, “তা নয়, হে আল্লাহর রাসূল।
তবে আপনার সেজদার দীর্ঘতার কারণে মনে হয়েছিল আপনার প্রাণ-বায়ু বেরিয়ে গেল কিনা।”
তিনি বললেন, “তুমি কি জান আজ কোন রাত?”
আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই অধিক অবগত।
তিনি বললেন, “আজ মধ্য শাবানের রাত।
মহান আল্লাহ এই মধ্য শাবানের রাতে তাঁর বান্দাদের দিকে মনোনিবেশ করেন এবং যারা তাঁর মার্জনা চায় তাদেরকে মার্জনা করেন, আর যারা তাঁর রহমত প্রত্যাশা করে তিনি তা তাদেরকে দান করেন।
তবে হিংসা বিদ্বেষীরা যেভাবে আছে তাদেরকে সেভাবেই রেখে দেন।” বর্ণনায়, আয়েশা বিনত আবুবকর (রা.)।
বাইহাক্বী বলেন, “হাদিসটি উত্তম মুরসাল।”
মুরসাল হচ্ছে এমন হাদিস যার সনদে-সূত্রে শেষের দিকে কেউ বাদ পড়েছেন।
বাইহাক্বী প্রণীত, শুয়াবুল ঈমান, ৩/১৪০/৫ )
৫। যখন মধ্য শাবানের রাত্র আসবে তখন তোমরা রাতের বেলায় ইবাদত কর এবং দিনের বেলায় রোজা রাখ। কেননা আল্লাহ তা’আলা দুনিয়ার আসমানে আসেন এবং বলেন কেউ কি ক্ষমা প্রার্থী আছ, আমি তাকে ক্ষমা করব। কেউ কি রিজিক প্রার্থী আছ, আমি তাকে রিজিক দেব। কেউ কি বিপদে আপদে আছ, আমি তার পরিত্রাণ করব।
এভাবে আল্লাহ আহবান করতে থাকেন যতক্ষণ পর্যন্ত না ফজরের সময় হয়।
বর্ণনায়, আলী (রা.)।
(আশ-শাওকানী বলেন, “হাদিসটির সূত্র দুর্বল।” তুহফাতুজ জাকিরীন, (ক্রম ২৪১) প্রণয়নে আশ-শাওক্বানী।
৬। আল্লাহ তা’আলা মধ্য শাবানের রাতে তাঁর বান্দাদের দিকে দৃষ্টিপাত করেন। তিনি বিশ্বাসীদেরকে মাফ করেন ও অবিশ্বাসীদের ক্ষমা স্থগিত করেন এবং হিংসা-বিদ্বেষীদেরকে তাদের নিজ অবস্থায় রেখে দেন (সেদিনের জন্য যখন তারা সংশোধিত হয়ে তাঁকে ডাকবে)।
বর্ণনায়, আবু সা’বাহ আল খাশানী (রা.)। আল-মুনযিরী বলেন, ‘হাদিসটির সূত্র সহীহ বা হাসান বা এই দু’য়ের কাছাকাছি।
আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব, ৩/৩৯২।
উপরোক্ত হাদিসগুলোর আলোকে এটাই প্রমাণিত হয় যে রাসুল করিম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্র শাবান মাসে অধিক পরিমাণে রোজা রাখতেন।
এবং মধ্য সাবানের রাত্রিতে নফল সালাত আদায় করতেন।
মধ্য সাবানের ১৫ দিন পরেই শুরু হয় পবিত্র রমাদান।
তাই পবিত্র রামাদানের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এই রাত্রিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আল্লাহর ক্ষমা ও পুরস্কারপ্রাপ্তির মহিমান্বিত মুহূর্তগুলো আমাদের জীবনে বারবার ঘুরে ফিরে আসে। রহমতের দরজা উন্মুক্ত করে মাগফিরাতের কপাট খুলে বান্দার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে থাকেন রাহীম ও গাফূর মহান রাব্বুল আলামীন।
অতি কাছ থেকে বান্দাকে হাতছানি দিয়ে বারবার আহ্বান করা হয়।
আছে কি অনুতপ্ত কোনো পাপী বান্দা, যে ক্ষমা প্রাপ্তির সুসংবাদ নেবে? আছে কি বিপদগ্রস্ত কোনো ব্যক্তি, যে বালা-মুসিবত থেকে মুক্তির ঠিকানা খুঁজে নেবে?
ধন-সম্পদ ও রিযিক তলবকারী কোনো বান্দা আছে কি, যে অফুরন্ত খাযানা থেকে রিযিকের নিশ্চয়তা নেবে?
বুদ্ধিমান তারাই যারা এই সুযোগগুলো সাদরে গ্রহণ করে। আদর্শ ও পবিত্র জীবনের হাতছানিকে যথাযথভাবে কাজে লাগায়।
কিন্তু আফসোস, আমরা অনেকেই নিজেদের কর্মকাণ্ডের দোষে মহান প্রভুর এ দান থেকে উপকৃত হই না বরং বঞ্চিত হই। কেউ একে অবহেলায় কাটিয়ে দেয়, আবার অনেকে এ সুযোগের অপব্যবহার করে।
নগদ ও দৃশ্যমান বস্তুর উপর অতি বিশ্বাসী আমরা কেউ কেউ নিজের পাপের বোঝা দেখে শঙ্কিত হই। ভাবি, এত কিছুরও ক্ষমা সম্ভব? অথচ ভুলে যাই আল্লাহর গাফফার (বারবার ক্ষমাকারী) সিফাতের কথা।
এ প্রসঙ্গে শুধু একটি ‘হাদিসে কুদসী’ উল্লেখ করছি। আল্লাহ বলেন, হে আদম-সন্তান! তুমি যা দুআ করবে, যা আশা করবে আমি বিগত জীবনের সবকিছু ক্ষমা করে দেব। আমি কারো পরোয়া করি না।
হে আদম-সন্তান!
তোমার পাপ যদি আকাশসমও হয় অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি সব ক্ষমা করে দেব।
হে আদম-সন্তান!
তুমি যদি পুরো পৃথিবীর ভূমি সমপরিমাণ অপরাধ নিয়ে আমার কাছে আস এবং শিরকমুক্ত হয়ে আমার পথে ফিরে আস তাহলে আমিও এর সমপরিমাণ ক্ষমা ও মার্জনা নিয়ে তোমার কাছে হাজির হব।
—তিরমিযী, হাদিস ৩৫৪০
অন্যদিকে আমরা অনেকেই এ সুবর্ণ সুযোগকে হাতছাড়া করি এর অপব্যবহার করে।
প্রথমত অনেকে অতি চালাকি করে ভেবে রাখি, এখন যা ইচ্ছা করে তেমনই করতে থাকি।
অমুক অমুক রাতে তওবা ও কান্নাকাটি করলে সব পাপ-পঙ্কিলতা ধুয়ে মুছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আমাদের অজ্ঞতাপ্রসূত ধারণা।
তাওবা অর্থ আত্মসমর্পণ, যে ব্যক্তি কোনো না কোনো দিন অনুতপ্ত ও অনুশোচনাকারী হয়ে আত্মসমর্পণের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে, সে ব্যক্তি আত্মসমর্পণের আগে-পরে এমন কর্মকাণ্ডে কীভাবে লিপ্ত হতে পারে যার জন্য তাকে অনুশোচনা করতে হয় বা শাস্তি ভোগ করতে হয়।
অতএব শবে বরাত ও শবে কদরের মতো মহিমান্বিত দু’টি রজনী আর শাবান ও রমযানের মতো রহমত ও বরকতপূর্ণ দুটি মাহিনা আমাদের দ্বারে উপস্থিত।
দয়াময় আল্লাহর পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেছেন:
نَبِّئْ عِبَادِیْۤ اَنِّیْۤ اَنَا الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُۙ۴۹ وَ اَنَّ عَذَابِیْ هُوَ الْعَذَابُ الْاَلِیْمُ.
‘আমার বান্দাদেরকে জানিয়ে দিন যে, আমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, দয়ালু এবং আমার শাস্তিই হল যন্ত্রণাদায়ক।’
—সূরা হিজর, আয়াত ৪৯-৫০
বিশেষত শবে বরাত একেবারেই সন্নিকটে।
অতি উৎসাহী যেকোনো কর্মকাণ্ড যেমন আতশবাজি ফোটানো, এবাদত বন্দেগী ছেড়ে বিনা প্রয়োজনে আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়া আমাদেরকে এ রাতের রহমত ও মাগফিরাতের মহা নেয়ামত থেকে বঞ্চিত করে দিতে পারে।
বিশেষ করে এই দিনে ঘর-বাড়িতে আলোকসজ্জা করা, মাজারে মোমবাতি জ্বালানো, মসজিদে ওয়াজ মাহ্ফিলের ব্যবস্থা করা এসব না করে আমরা যেন রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে একাকী নীরবে এবাদত করেছেন, আমরা যেন সেভাবে এ রাত্রিতে আল্লাহর এবাদত করি, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট নিজের পাপের জন্য তওবা করি। আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি।
বিভিন্ন সহীহ হাদীসে এসেছে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায় পুরো শাবান মাসই রোযা রাখতেন।
রমযানের পর এই একটি মাসেই তিনি সবচেয়ে বেশি রোযা রাখতেন। এর কারণ প্রথমত রমযান ও রজব মধ্যবতীর এ মাসটিকে মানুষ হেলায় নষ্ট করে ফেলে।
তাই রমযানের প্রস্তুতি স্বরূপ নবীজী এ মাসে বেশি বেশি রোযা রাখতেন।দ্বিতীয় এ মাসে পুরো বছর মৃত্যুবরণকারী সব মানুষের মৃত্যুর কথা লিপিবদ্ধ করা হয়। নবীজী চাইতেন, তাঁর মৃত্যুর কথা এমন সময় লেখা হোক যখন তিনি রোযাদার।
-বুখারী, হাদীস ১৯৬৯-১৯৭০; ফাতহুল বারী ৪/২৫১-২৫৩; আবু ইয়ালা, হাদীস ৪৮৯০; আততারগীব ওয়াততারহীব ২/১১৭
হযরত আয়েশা রা. বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে নামাযে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সেজদা করেন যে, আমার ধারণা হল, তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করে আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়েশা! তোমার কি এই আশংকা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক্ব নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার আশংকা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না? নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জান, এটা কোন্ রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভালো জানেন।
নবীজী তখন ইরশাদ করেলেন, এটা হল অর্ধ শাবানের রাত। আল্লাহ তাআলা এ রাতে তার বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন। ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। -শুআবুল ঈমান ৩/৩৮২
قال البيهقى : هذا مرسل جيد
হযরত আয়েশা রা. হতে তিরমিযীসহ অন্যান্য কিতাবে ভিন্ন সূত্রের বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায়, নবীজী এ রাতে জান্নাতুল বাকীতে এসে মৃতদের জন্য দু’আ ও ইস্তিগফার করেছেন। এরপর আয়েশা রা.কে বলেছিলেন, এ রাতে আল্লাহ কালব গোত্রের বকরীর পশমের চেয়েও বেশি গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
-তিরমিযী, হাদীস ৭৩৯
قال الراقم : وفيه انقطاع بين حجاج و يحي بن كثير كما قال ابن معين.
একটি ‘জয়ীফ’ সনদে হযরত আলী রা. হতে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, চৌদ্দ শাবানের দিবাগত রাত যখন আসে তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত বন্দেগীতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোযা রাখ। কেননা এরাতে সূর্যাস্তের পর হতে আল্লাহ প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন, কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি? আমি ক্ষমা করব। আছে কি কোন রিযিকপ্রার্থী? আমি তাদের রিযিক দেব। আছে কি কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি? তাকে আমি উদ্ধার করব। এভাবে সুবহে সাদিক পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা বলে বলে তাদের আহ্বান করতে থাকেন। -ইবনে মাজা ১৩৮৪
এ হাদীসটির সনদ যদিও দুর্বল তদুপরি হাফেজ ইবনে রজব রহ. বলেছেন যে, এ দিনে রোযা রাখা নিষেধ নয়, কারণ এতো আইয়ামে বীয অর্থাৎ প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখের মুস্তাহাব রোযারই অন্তভুর্ক্ত। -লাতায়িফুল মাআরিফ ১৫১
তাছাড়া শাবান মাসে বেশি বেশি রোযা রাখার ব্যাপারে সহীহ হাদীস তো আমরা কিছু পূর্বেই জেনে এসেছি।
উপরোক্ত হাদীসগুলি দ্বারা যা বুঝা যায় তার সারসংক্ষেপ হল, এ রাতে আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকা, একনিষ্ঠ মনে কৃত পাপাচারের জন্য ইস্তিগফার ও তাওবা করাই প্রত্যেক মু’মিনের কর্তব্য। মুসলমান মাত্রই ওই সকল গুনাহ থেকে বেচেঁ থাকা উচিত যা এই মহান রাতের ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ ও দু’আ কবুলের সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত করে বলে হাদীসে এসেছে। শিরক, হিংসা-বিদ্বেষ, অন্যায় হত্যাকাণ্ড ও ব্যভিচারের মতো আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত পাপাচার এর অন্যতম। -ইবনে রজব, লাতায়িফুল মাআরিফ ১৫৪-১৫৫
এ ছাড়াও উপরোক্ত হাদীস দ্বারা আরও প্রমাণিত হল রাতে দীর্ঘ ক্বেরাত ও সিজদা ইত্যাদি দ্বারা বেশি বেশি নফল নামায পড়া, মৃতদের কবর যিয়ারত করা ও সম্ভব হলে এর পরদিন রোযা রাখা এ সময়ের মাসনুন আমল। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে এ রাতে গর্হিত ও অহেতুক সব কর্মকাণ্ড বর্জন করে হাদীসে বর্ণিত এসব আমল দ্বারা একটি সু্ন্দর ইসলামী জীবন গঠনের তাওফীক দান করুন, আমিন।
কবিরহাট নিউজ, ইসলামী ডেস্ক।
https://slotbet.online/