কবিরহাট নিউজ: নিজস্ব প্রতিবেদক। প্রকাশিত: ৯:৪৫ অপরাহ্ন, ২৮শে জানুয়ারি ২০২৪ ইং।
গত ১৮ই জানুয়ারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা শেয়ার বাজারে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর এক সপ্তাহে বড় ধরনের ধ্বস নেমেছে দেশের শেয়ারবাজারে।
এই ধরনের দরপতনে গত এক সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় ৩৩ হাজার কোটি কমেছে।
আর এই পতনের বাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের খেলা দেখিয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ কোম্পানী (KBPPWBIL) গত এক সপ্তাহে কোম্পানিটির সর্ব মোট শেয়ারের দাম বেড়েছে ৭১০ কোটি টাকারও বেশী।
এই শেয়াটির দাম ছিল মাত্র নয় টাকা,
গত আর গত ৬-৭ মাস যাবত কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েই চলেছে।
এজন্য বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে ডিএসই থেকে বার বার সতর্ক বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে।
এই শেয়ারটির অস্বাভাবিক ভাবে দাম বাড়ার কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্ত কমিটি গঠন করে, সেই তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনও তৈরি করেছ।
কিন্তু এরপরও বিনিয়োগকারীরা সতর্ক হয়নি, বরং হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো ছুটছে খান ব্রাদার্সের পিছনে।
গত ৬-৭ মাসে KBPPWBIL বা খানব্রাদার্স কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ২০০০%।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় ৭.৭০% কমে শেয়ারটির সর্বশেষ মূল্য ছিল ২১০ টাকা।
অথচ ছয় মাস আগে সেটির মূল্য ছিল মাত্র ১০ টাকা।
মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে দশ টাকা থেকে শেয়ারের দাম বেড়ে ২১০ টাকা হওয়াকে অস্বাভাবিক মনে করছেন শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্টরা।
শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞরা বলেন খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের আর্থিক ভিত্তি খুবই দুর্বল।
এটা একটা লোকসানি কোম্পানি, একই কারনে তারা বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে পারছে না।
এরকম একটি লোকশানি কোম্পানির শেয়ারের দাম দুই হাজার শতংশ বেড়ে যাওয়া কিছুতেই স্বাভাবিক ঘটনা হতে পারে না।
কোন বিশেষ চক্র এই শেয়ার গুলো নিয়ে কারসাজি করে পরিকল্পিতভাবেই শেয়ারের দাম বাড়াচ্ছে।
কোনো বিনিয়োগকারী যদি গত বছরের মাঝামাঝি খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের ৫ লাখ টাকায় পঞ্চাশ হাজার শেয়ার কেনেন, তাহলে এখন তার বাজারমূল্য পাবে ১০,৫০০০০০/- এক কোটি পাঁচ লক্ষ টাকা।
অর্থাৎ ৬ মাসেই কোটিপতি!
২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৯৮ কোটি ৮ লাখ টাকা। শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৮০ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭৭টি।
এর মধ্যে ৩০ দশমিক ১৩ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৬৪ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ।
কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক ভাবে দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১৩, ১৬ ও ২৪ জানুয়ারি ডিএসই থেকে নোটিশ পাঠানো হয়। এসব নোটিশের জবাবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ প্রতিবারই জানিয়েছে, সম্প্রতি শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে, তার পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।
কেউ ১০ টাকার শেয়ার দুইশ টাকায় কিনলে সেটার দায় আমাদের নয়।
এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন,
খান ব্রদার্সের শেয়ারের দাম বাড়ার বিষয়টি তদন্ত করতে ডিএসইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ডিএসই।
এটি নিয়ে এখন কাজ করছে এনফোর্সমেন্ট বিভাগ।
এ বিষয়ে KBBPWBIL কোম্পানির সচিব তপন কুমার সরকার বলেন,
আমাদের কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসই যতগুলো নোটিশ দিয়েছে আমরা সবগুলোর জবাব দিয়েছি। সর্বশেষ ২৪ জানুয়ারির নোটিশেরও জবাব দিয়েছি। আমরা প্রতিবারই জানিয়েছি কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।
শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়লেও এই দাম বাড়ার সাথে আমাদের কোম্পানির কোন সম্পৃক্ততা নেই।
আমরা সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদনেও লোকসানের তথ্য তুলে ধরেছি।
কবিরহাট নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক।
https://slotbet.online/