• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]
শিরোনাম ::
কোম্পানীগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সড়ক ও সেতু মন্ত্রীর ভাই-ভাগিনাসহ ১০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল ভয়াবহ লোডশেডিং এর কারনে চরম দুর্ভোগে নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলার মানুষ! কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের সামনে চলছিল মাদক বেচাকেনা আজ ঐতিহাসিক ২৬ মার্চ, আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস। শত শত ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে কবিরহাটে উদ্বোধন হলো বাইতুন নূর জামে মসজিদ! যুক্তরাষ্ট্রে দুর্বৃত্তের হামলায় এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নিহত। আজ ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ। গাজা সংঘাত অবসানে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রয়োজনে আমরাও স্যাংশন দিতে পারি: প্রধানমন্ত্রী

নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলার ১ নং নরোত্তমপুর ইউনিয়নের প্রখ্যাত সাধক, আধ্যাত্মিক মহাপুরুষ মাওলানা শাহ আলামুরহমান চিশতী রহমতুল্লাহ ওরফে ছনখোলা দরবেশ সাহেব হুজুর।

রিপোর্টারের নাম / ১২ বার
আপডেট সময় :: রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

আজ আপনাদের এমন একজন আধ্যাত্মিক মহাপুরুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো

যার জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত ছিল অজস্র কারামত সমৃদ্ধ।
তিনি হলেন প্রখ্যাত সাধক, ওলিকুল শিরোমণি, কুতুবল আকতাব, শাহ-ছুফী হযরতুল আল্লামা মাওলানা শাহ আলামুর রহমান চিশতী (রঃ) (ছনখোলার দরবেশ সাহেব) হুজুর।

তিনি নোয়াখালী সদর থানার অশ্বদিয়া ইউনিয়নে জন্ম গ্রহন করেন।
এর পর ভারতের উত্তর প্রদেশে ইলমে তাসাউফ শিক্ষা গ্রহন করেন।
তারপর কোন এক সময় তিনি নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলার ১নং নরোত্তমপুর ইউনিয়নের নরোত্তমপুর গ্রামের ঘোষপুকুরপাড় এলাকায় এসে আস্তানা গড়েন।

ঐ এলাকাটা তখন ছিল বে-আবাদি, তিনি যেখানে আস্তানা গড়েছিলেন সেখানে ছিল ছনক্ষেত।
সেখানে বসে বসেই তিনি আল্লাহর ধ্যান করতেন,
মাঝে মাঝে কোথাও চলে যেতেন,
আবার আসতেন।
পরতেন একবারে শুভ্র সাদা এক টুকরা কাপড়, যেটা দিয়ে পুরো শরীরকেই ঢেকে রাখতেন, অনেকটা হজের কাপড়ের মত।
এই আছে এই নাই, কিন্তু কোথায় যাচ্ছে আবার কোথা থেকে আসছে কেউ বুঝতে পারছে না, এভাবেই হুজুরকে নিয়ে তখন মানুষের মাঝে কৌতুহল সৃষ্টি হয়!

তখন কারো রোগ ব্যাধি হলে, অসুখ-বিসুখ হলে, কলেরা প্লেগ মহামারি বসন্ত ইত্যাদি দুরারোগ্য ব্যাধি হলে মানুষ হুজুরের কাছে নিয়ে যেতেন, আর হুজুর রোগীর গায়ে একটু ফু দিলেই সেরে যেতো অনেক দূর আরোগ্য কঠিন ব্যাধি।

তখন থেকে মানুষ হুজুরের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র মানত করতেন, যেমন কেউ নিয়ে আসতেন নিজের গরুর দুধ, কেউ ফলমূল, কেউ টাকা পয়সা ইত্যাদি।
কিন্তু হুজুর বুঝতে পারতেন, কে কেন তার জন্য কি এনেছেন?

হুজুরের ভাগিনা হাবিবুল্লাহ, উনার বয়স এখন ১০৬ বছর। তিনি অনেক সময় হুজুরের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল, কথা বলার সুযোগ হয়েছিল, উনার বয়স ছিল তখন ২৫ থেকে ৩০ বছর।

তিনি জানালেন একদিন কোন এক ব্যক্তি হুজুরের জন্য দুধ নিয়ে এসেছেন। কিন্তু হুজুর দুধ রাখলেন না, বললেন তোমরা এই দুধ হাঁটুর নিচে রেখে নিয়ে এসেছো, এবং পথের মধ্যে কোন এক জায়গায় বিশ্রাম করেছ যেখানে কুকুরের প্রস্তাব ছিল, দুধগুলো তোমরা নিয়ে যাও।
হুজুর কয়েক কিলোমিটার দূরে থাকলেও না দেখেই যে কথাগুলো বলেছিলেন সেটাই ছিল সত্য ।
যে কারণে উনারা লজ্জিত হয়েছেন এবং দুধগুলো ফেরত নিয়ে গেলেন।

তিনি সাবান ব্যবহার করতেন না, গোসল করতেন গায়ে মাটি মেখে, কেউ জানতে চাইলে বলতেন আমরা মাটির মানুষ মাটিই আমাদের জন্য খাঁটি।
সে সময় হুজুরের আস্তানা সংলগ্ন একটি পুকুর এবং সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন।

সে মসজিদে কোন এক শুক্রবার হুজুর মসজিদের সামনের পুকুর থেকে গা-গোসল ধুয়ে অজু করে জুমার নামাজ আদায় করতে মসজিদে প্রবেশ করলেন, প্রবেশ করার সময় সবাই হুজুরকে দেখেছে।
কিন্তু এরপর তিনি কোন সারিতে কোন স্থানে নামাজ আদায় করেছেন, নাকি কোথাও বেরিয়ে গিয়েছেন সেটা কেউ দেখেননি।

এর কিছুদিন পর এলাকার কয়েকজন মানুষ হজ করে দেশে ফিরলেন, তারা বললেন যে তারা হুজুরকে ওই একই শুক্রবারে সৌদি আরব দেখেছেন পবিত্র কাবা শরীফ তাওয়াফ করতে।

এর মানে হচ্ছে আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের ওলি-আউলিয়াদের এমন কিছু আধ্যাত্মিক শক্তি দান করেন, যে শক্তির কারণে তারা নিজেকে হঠাৎ অদৃশ্য করে ফেলতে পারতেন, অনেক অসাধ্যকে সাধন করতে পারতেন, যে কারণেই কোন দুরারোগ্য কঠিন ব্যাধিগ্রস্থ কাউকে ফু দিলে সে সুস্থ হয়ে যেত।
এই ক্ষমতাটুকু আল্লাহ তাদেরকে দিয়েছেন বলেই সম্ভব হয়েছে।

হাবিবুল্লাহ জানিয়েছেন, হুজুর কোন একজনকে বিয়েও করেছেন, কিন্তু সেটা ছিল অনেকটা গল্পের মত।
কোন এক ব্যক্তি তার নাতনিকে নিয়ে হুজুরের কাছে এসেছিলেন।
হুজুর জানতে চাইলেন এটা আপনার কি হয়?
ঐ ব্যক্তি বললেন এটা আমার নাতনি।

হুজুর হাসির ছলে বললেন, আপনার নাতনিকে কি আমার কাছে বিয়ে দেওয়া যায় না?
হুজুরের কথা শুনে ওই ব্যক্তি সাথে সাথেই রাজি হয়ে গেলেন এবং নাতিকে বিয়ে পড়িয়ে দিলেন।
হুজুর তার বিবাহিত স্ত্রীকে দাদার সাথে পাঠিয়ে দিলেন। এবং স্ত্রীর জন্য নিয়মিত ভরণপোষণ পাঠাতেন।
তবে দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে কেউ কোন সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। তবে এটা সত্য যে হুজুরের কোন সন্তানাদি ছিল না।

অনেকেই ধারনা করেন, মোরাকাবার কারণে হুজুরের অন্তরে যে নূরের সৃষ্টি হয়েছে সেই নূরের কারণেই তিনি সংসার জীবন থেকে একটু দূরে ছিলেন ।
বিষয়গুলো অনুমান নির্ভর!
তবে হুজুর বিয়ে করেছেন এটাই সত্য!

হুজুর ১৫ই মাঘ ১৩৬৩ বাংলা, ১৯৫৭ ইং সালের ২৮শে জানুয়ারি, রোজ মঙ্গলবার মৃত্যুবরণ করেন।
হুজুরের মৃত্যুর পর হুজুরের প্রতিষ্ঠিত মসজিদের পাশেই হুজুরকে দাপন করা হয়, এখানেই এই শাহ ছুফী আধ্যাত্বিক সাধকের মাজার শরীফ!

হুজুর জীবিত থাকতেই বলেছিলেন এই স্থানে মাদ্রাসা হবে, এতিম খানা হবে, শত শত শিক্ষার্থী লেখাপড়া করবে, রাস্তাঘাট উন্নত হবে, হুজুরের মাদ্রাসার মাঠে হেলিকপ্টার নামবে ইত্যাদি।
আসলেই হুজুরের সব কথাগুলোই সত্য হয়েছে!

হুজুরের ওয়াকফ স্টেটের ছনখোলা আলামিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার সাবেক প্রিন্সিপাল ও এতিমখানার সুপারেন্টেন্ড হেদায়েতুল্লাহ খান সাহেব জানালেন,
হুজুরের মাজারের এতিমখানায় প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে শতশত মানুষ আসে মাজার শরীফ জিয়ারত করার জন্য। তারা বিভিন্ন কিছু মানত করেন, কেউ হাস কেউ মোরগ, কেউ গরু, কেউ ছাগল, কেউ চাল, কেউ ডাল, কেউ তেল, কেউ নগদ টাকা পয়সা ইত্যাদি নিয়ে আসেন। সেটা দিয়েই চলে ২২৭ জন এতিমের প্রতিদিন তিন বেলা খাওয়ার, জামা কাপড়, লেখাপড়া খরচ ইত্যাদি।
কোন কোন মাসে ৪০-৫০ টা পর্যন্ত ছাগল আসে।

প্রিন্সিপাল সাহেব বললেন,
আমি প্রায় ৩০-৩৫ বছর যাবত এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করছি। এখানে মানুষের দান করা প্রতিটি টাকা এই প্রতিষ্ঠানের কল্যাণেই ব্যয় করা হচ্ছে, এতিমদের জন্যই ব্যয় করা হচ্ছে। একটি টাকাও অপাত্রে ব্যয় করা হচ্ছে না।

হুজুরের উসিলায় যে যা দান করছে এবং হুজুরের ওয়াকফ স্টেটের যে সম্পত্তি আছে এগুলোর আয় দিয়ে চলছেই প্রতিষ্ঠানগুলো।

অনেক এতিমের ভরণপোষণ হচ্ছে, অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে, দূর দুরান্ত থেকে লোকজন আসার কারণে এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারিত হচ্ছে, সবই আল্লাহর রহমতে হুজুরের উছিলাই হচ্ছে।

জানতে চাইলাম, হুজুরের নামে প্রতিষ্ঠিত আলামিয়া ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসায় কতজন ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করছে?
তিনি জানালেন এক হাজারের ও বেশী শিক্ষার্থী সেখানে লেখাপড়া করছেন।
আর এতিমখানায় রয়েছেন ২২০ জন এতিম এবং প্রায় ২৭ জন শিক্ষক।
অত্যন্ত সুন্দর ও সুশৃংখলভাবেই পরিচালিত হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান গুলো।

প্রায় আধা ঘন্টারও বেশি সময় প্রিন্সিপাল সাহেব এবং শিক্ষকদের সাথে কথা বললাম, ছনখোলার দরবেশ সাহেব হুজুর সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম।

আমি বললাম যে হুজুরের সাথে সরাসরি দেখা হয়েছে এমন কেউ কি এখনো জীবিত আছে?
তিনি বললেন একজন আছে, তিনি প্রতিদিন এই মসজিদে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করেন, তার বয়স ১০৬ বছর, এই বয়সে তিনি জামাতের সাথে নামাজ আদায় করেন হুজুরের মাজারের মসজিদে।

অধ্যাপক সাহেব বললেন উনি যোহুরের নামাজ পড়তে আসবেন এখানে, আপনারাও এখানে যোহুরের নামাজ টা আদায় করেন, তখন উনার সাথে সরাসরি কথা বলবেন এবং এতিমদের সাথে দুপুরের খাবারটা খেয়ে যাবেন।

প্রিন্সিপাল সাহেবের অনুরোধ রক্ষা করে সেখানে জোহুরের নামাজ আদায় করলাম এবং হুজুরের মাজার শরীফ জিয়ারত শেষে হুজুরের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ হওয়া ১০৬ বছর বয়সী হাবিবুল্লাহর সাথে কথা বলে হুজুরের সম্বন্ধে, হুজুরের কেরামতি সম্বন্ধে অনেক কিছু জানলাম!

লিখা দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে, সেটা পরে আপনাদের সাথে আস্তে আস্তে শেয়ার করব।
যারা কোন জনহিতকর কাজে দান করার ইচ্ছে রয়েছে তারা যদি এই এতিমখানা বা মাদ্রাসায় দান করেন তাহলে এই প্রতিষ্ঠানটিই একেবারে সঠিক জায়গা!
কারণ এখানে একটি পয়সাও কেউ মেরে খায় না বা অপচয় হয় না!
আপনি চাইলে এই এতিমদের জন্য এক বেলা খাওয়ারের ব্যবস্থা করতে পারেন, একদিন ইফতারের ব্যবস্থা করতে পারেন, অথবা কিছু টাকা দিয়ে তাদের খাওয়ার আয়োজন এর ব্যবস্থা করতে পারেন, গরু ছাগল ভেড়া ইত্যাদি দিয়ে তাদেরকে একবেলা ভালো খাওয়ারের ব্যবস্থা করতে পারেন।
অথবা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার জন্য টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করতে পারেন।
এগুলো সবিই ছদগায়ে জারিয়া!

নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলার ১ নং নরোত্তমপুর ইউনিয়নের প্রখ্যাত সাধক, আধ্যাত্মিক মহাপুরুষ মাওলানা শাহ আলামুরহমান চিশতী রহমতুল্লাহ ওরফে ছনখোলা দরবেশ সাহেব হুজুর।

মিজানুর রহমান ‘কিরন’

কবিরহাট নিউজ: ৪ঠা জানুয়ারি,

রবিবার-২০২৪ইং ৯:৫০ অপরাহ্ন।


☞ এ জাতীয় আরো খবর

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক : মিজানুর রহমান কিরণ।
সহ-সম্পাদক ও প্রকাশক : তৌহিদুল আনোয়ার আজিম।
নির্বাহী সম্পাদক : জাফর ইকবাল
বার্তা সম্পাদক : মোহাম্মদ হারুন আল রশিদ।

https://slotbet.online/