নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলায় ব্যবসায়ী তারেক রহমান প্রতিদিন ৩ হাজার বন্যা দুর্গত মানুষকে খাওয়াচ্ছেন।
কবিরহাট নিউজ,
১লা সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং রবিবার, ২০:০০ অপরাহ্ন।
নোয়াখালী জেলার কবির হাট পৌরসভায় কবিরহাট সরকারি মডেল হাইস্কুল, কবিরহাট সরকারি কলেজে, কবিরহাট কে,এস টাওয়ার ও খলিল মঞ্জিলের আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যা দুর্গত এলাকা হতে আশ্রয় নেওয়া ৩০০০ মানুষের প্রতিদিন দুই বেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন ব্যবসায়ী তারেক রহমান রাজন।
শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় যখন কবিরহাট উপজেলার ঘরবাড়ি ডুবে যাচ্ছিল ঠিক তখন ২২ই আগস্ট থেকে পানি বন্দি দিশেহারা মানুষগুলো কলার ভেলা ও নৌকায় করে পরিবারের লোকজন, নারী, শিশু বৃদ্ধ, অসুস্থ মানুষ গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি ইত্যাদি নিয়ে বসতবাড়ি ছেড়ে কবিরহাট সরকারি কলেজ, কবির হাট সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, কে,এস ভবন, খলিল মঞ্জিল সহ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে এসে আশ্রয় নেওয়া শুরু করে।
আর ঠিক তখন থেকেই কবির হাট বাজারে বিশিষ্ট ব্যবসীয় তারেক বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী ও লাস্ট টেষ্ট কাবাব হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কবিরহাট পৌরসভার এনায়েত নগর গ্রামের ডাক্তার বাড়ির নুরুলক মেম্বার এর সন্তান তারেক রহমান (রাজন) তার নিজস্ব উদ্যোগে এবং নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিদিন দুপুর ১৫০০ এবং রাতে ১৫০০ করে দুই বেলাতে প্রতিদিন তিন হাজার মানুষের খাওয়ার আয়োজন করে।
তারেক রহমান রাজনের লাস্ট টেস্টে কাবাব হাউসের প্রায় ৩০ জন কর্মচারী দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে কখনো মাছ সব্জি, কখনো মুরগির মাংস, কখনো গরুর মাংস, কখনো ডিম, কখনো ডাল, কখনো খিচুড়ি কখনো বিরানি ইত্যাদি মানসম্মত ও সুস্বাদু খাবার তৈরি করে কলেজের সম্মানিত প্রিন্সিপাল সাহেব এবং শিক্ষকদের সহযোগীতায় বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবীকে নিয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে গত ১০ দিন যাবত প্রতিদিন দুই বেলা করে ১৫০০ মানুষকে খাওয়ার পরিবেশন করছেন।
এছাড়াও বন্যা শুরুর প্রথম সপ্তাহে যেসব মানুষ বাড়ি-ঘরে আটকা পড়ে গিয়েছিল যাদের রান্নাঘর পানিতে ডুবে গিয়েছিল তারা লাড়কির চুলায় রান্না করতে না পেরে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছিল সেরকম প্রায় তিনশত পরিবারকে তারেক রহমান তিনশত এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বিনামূল্যে দিয়েছিলেন এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রায় ৩০০০ পরিবারের মাঝে ত্রান সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, কবিরহাট হাইস্কুল, কবিরহাট কলেজ, কে,এস টাওয়ার এবং খলিল মঞ্জিলসহ তিন চারটি আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়মিত খাওয়ার বিতরণ তো করছিই, এছাড়াও বন্যা শুরু হওয়ার প্রথম সপ্তাহে ঘোষবাগ কাদেরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, কবিরহাট ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসা, মির্জানগর এতিমখানা, ছনখোলার দরবেশ সাহেব হুজুরের এতিমখানা, করমবক্স হাই স্কুল ও করমবক্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ কবিরহাট উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ১২ হাজার মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও এক হাজার মানুষের মাঝে ১০ কেজি করে চাউল বিতরণ করেছি।
তারেক রহমানের এই মানবিক কাজগুলো সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
কবিরহাট সরকারি কলেজ, কে,এস টাওয়ার ও কবিরহাট সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রের আশ্রয় নেওয়া অনেকেই জানিয়েছেন তারা এখানে ভালো আছেন। এখানে খাওয়ারের মান উন্নত, প্রতি বেলায় মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, ও কখনো কখনো বিরানি বা খিচুড়ি দেওয়া হচ্ছে, কেউ খাওয়ার কোন কষ্ট করছে না।
তারেক রহমানের এই মহতী উদ্যোগের জন্য তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তারেক রহমান (রাজন) বলেন, এটা আসলে ধন্যবাদ প্রশংসা বা বাহা বাহা পাওয়ার জন্য নয়, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই এ কাজগুলো করছি।
বিপদগ্রস্থ মানুষগুলো ঘর বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছে, তাদেরকে আমি মেহমানের মতই সম্মান করছি।
মানুষ যতদিন আশ্রয়কেন্দ্র থাকবে ততদিন পর্যন্ত আমার এই মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।
আমার লাস্ট টেস্ট কাবাব হাউজের কর্মচারীরা সব সময় মেহমানদের জন্য রান্না করে সেগুলো পরিবেশনের সেবায় নিয়োজিত আছে।
আপনারা জানেন আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, আমার ক্ষুদ্র সামর্থের মধ্যে আমি চেষ্টা করছি মানুষের সেবা করার জন্য। এই বন্যার্থ মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করে আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও সময় দিতে পারছি না।
মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ফিরে গেলে আমি আবার আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সময় দেব ইনশাআল্লাহ! সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
মিজানুর রহমান “কিরণ”
কবিরহাট নিউজ।
https://slotbet.online/